রচনা লিখুন: 'স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং উন্নয়নের সুবর্ণরেখা’ ।
'স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং উন্নয়নের সুবর্ণরেখা’
১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত যাওয়ার পর দীর্ঘ ১৯০ বছরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন শোষণ ও নির্যাতনের হাত থেকে ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ মুক্তি পেলেও পূর্ব বাংলার বাঙালির ওপর জেঁকে বসে নতুন জান্তা। ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি জিন্নাহর ভ্রান্ত দ্বিজাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে ভারত থেকে আলাদা হয়ে পাকিস্তান নামের একটি অসম রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এর মধ্য দিয়ে শুরুথেকে বাঙালির জীবনে আবারও নেমে আসে শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতনের স্টিম রোলার। ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে স্বাধীন হলেও এই ভূখণ্ডের বাঙালি আবার পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। তবে থেমে থাকেনি বাঙালি জাতি। ঔপনিবেশিক পাকিস্তানের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ বাঙালি জাতি শুরু থেকেই অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার সর্বস্তরের মানুষ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুধু এ দেশের জনগণই নয়, আক্রান্ত জাতি ও সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়ায় এবং বাংলাদেশের পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয় প্রতিবেশী দেশ ভারত। মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র, আশ্রয় ও খাদ্য দিয়ে সহায়তা করে ভারত। এই সময় আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক পরিসরে বিশাল ভূমিকা রাখে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া)। সোভিয়েত ইউনিয়নের এই ভূমিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আরও ত্বরান্বিত করে। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুক্তিকামী ও গণতন্ত্রকামী মানুষ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী ও বীরত্বপূর্ণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি বিজয় লাভ করে।
তবে বলে রাখা দরকার যে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন; ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের সাধারণ নির্বাচন; ১৯৬২ সালে শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন; ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন; ১৯৬৮ সালের আগরতলা মামলা: ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান; ১৯৭০ সালের নির্বাচন; ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ; ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা; ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ পুরোটাই বঙ্গবন্ধুময়। আর জাতির পিতার অসমাপ্ত স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করে চলেছেন তারই সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা বলেছিল আগামী ১০০ বছরের মধ্যেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ডলার ছাড়াবে না। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় এই যে, মাত্র ৫০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২২২৭ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অথচ ১৯৭০-এ মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১৪০ ডলার। হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে 'তলাবিহীন ঝুড়ি' আখ্যায়িত করেছিলেন। কিন্তু অতি আশ্চর্যের বিষয় এই যে, ৫০ বছরে বাংলাদেশ নামক ঝুড়িটি আর তলাবিহীন নয়; ঝুড়ি এখন সাফল্যে পরিপূর্ণ । বর্তমানে বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলার।
মহামারি করোনাকালীন সময়ে বিশ্বের সব দেশে যখন প্রবৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৮.২ শতাংশ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ অর্জিত হতে পারে । করোনাকালীন কঠিন সময়েও বাংলাদেশে গত ফেব্রুয়ারি, ২০২১-এ ১৭৮ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে; যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ঘটনা। ১৯৭২-১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা অথচ জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি ৮১ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.২ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে বেড়েছে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যাও। স্বাধীনতার পর রপ্তানি আয়ের সত্তর ভাগ ছিল পাটের দখলে। বর্তমানে মোট রপ্তানির ৮২ শতাংশই তৈরি পোশাক খাতের দখলে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ভিশন ২০২১ দিয়েছেন এবং বাস্তবায়ন করেছেন যার মধ্য দিয়ে আমরা উন্নয়নশীল দেশ উন্নীত হয়েছে এবং ভিশন ২০৪১ এর মাধ্যমে আমরা আধুনিক এবং উন্নত দেশে পরিণত হব। বাংলাদেশ অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে, বড় বড় ফ্লাইওভার করা হয়েছে, মেট্রোরেল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, দেশজুড়ে রাস্তাঘাট কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে, দেশের সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ নিজস্ব অর্থায়নে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচক ও জরিপে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা’ বিষয়ে একটি নাতিদীর্ঘ রচনা লিখুন।
উল্লেখিত বিষয়ে সংক্ষিপ্ত রচনা লিখুন: আইনের শাসন
‘করোনা ভাইরাস’ (কোভিড-১৯) রোগের লক্ষণ ও তার প্রাদুর্ভাব রোধে করণীয় বিষয়টির উপর একটি রচনা লিখুন।
Write an essay in Bangla on "বৈশ্বিক উষ্ণায় সমস্যা ও প্রতিকার।
আপনি আমাকে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন, যেমনঃ
Are you sure to start over?